কেমন হবে বয়ঃসন্ধির খাবারদাবার?

আমি

Staff member
Administrator
Joined
Jun 8, 2016
Threads
177
Messages
3,437
Reaction score
119
Points
2,063
Age
51
Gender
Male

কেমন হবে বয়ঃসন্ধির খাবারদাবার?


১১ বছরের দীপুর খাবার নিয়ে রোজই চলে মায়ের সঙ্গে নানা টালবাহানা। এটা খাব তো, ওটা খাব না। সবচেয়ে ঝামেলা হয় রাতের বেলা দুধ খাওয়ানো কিংবা ডিম খাওয়ানোতে। এ দুটি ওর চোখের বিষ। মা পড়েছেন মহা দুঃশ্চিন্তায়। এ বয়সটা বেড়ে ওঠার বয়স। এ সময় ও যদি পুষ্টিকর খাবার না খায় তা হলে শরীর ও মেধার সঠিক বিকাশ হবে না।
দীপুর মায়ের মতো এমন দুঃশ্চিন্তায় আছেন অনেক অভিভাবকই। শৈশব পেরিয়ে এসেও তাদের না খেতে চাওয়ার অভ্যাসটা রয়ে যায়। কিন্তু বয়ঃসন্ধিকালে অর্থাৎ যাদের বয়স ১১ থেকে ১৪ বছর, তাদের খাবারদাবারে দরকার বাড়তি সচেতনতা। কারণ এ সময় হরমোনের পরিবর্তনের জন্য কিশোর-কিশোরীদের শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন ঘটে। বয়ঃসন্ধিকালে তারা বেড়ে ওঠে তরতর করে। এ বয়সে প্রয়োজন বেশি পরিমাণ শক্তি ও পুষ্টির। তাই খাদ্যাভ্যাস কেমন হওয়া উচিত—এ ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক খালেদা ইসলাম। তিনি জানান, এ সময় ছেলেমেয়েদের খাওয়া-দাওয়ার রুচির বদল হয়। শুধু স্বাস্থ্যগত দিক নয়, এ সময়ের খাদ্যাভ্যাস শিশুর পরবর্তী জীবনের পছন্দনীয় খাদ্য তালিকার ভিত গড়ে তোলে। খাওয়া-দাওয়ায় এ সময় একটু অবহেলা করলেই পরে পুষ্টিহীনতার শিকার হওয়ার ঝুঁকিতে পড়তে হয়। সকালের নাশতা না খাওয়া এ বয়সে যেন একটি ফ্যাশন। দুপুরের খাবারটাও বেশির ভাগ হয় বাইরের ফাস্টফুড খেয়ে। রোগা থাকার চিন্তা থেকেও অনেকে খায় না।

খালেদা ইসলাম আরও বলেন, খাবারের বিকল্প হিসেবেও স্ন্যাকস দেওয়া যেতে পারে। তবে এর পুষ্টিমান নিশ্চিত করতে হবে। বাইরের খাবার দেখতে আকর্ষণীয়, স্বাদটাও মজার। তাই কৈশর বয়সটাকে বাইরের খাবার একটু বেশিই টানে। ঘরেই যদি সবজি দিয়ে পিত্জা, রোল ও পাকোড়া বানিয়ে দেওয়া যায়, সেটা ভালো হয়। শর্করা খাবারের পাশাপাশি হাড়ের বৃদ্ধির জন্য দরকার ক্যালসিয়াম ও আয়রন। এসব পাওয়া যাবে দুধ, ডিম ও ফলমূলে। এ রকম বয়সে দুধ খেতে চায় না অনেকেই। তাই তাদের সরাসরি দুধ না দিয়ে দুধের তৈরি ফিরনি, দই, সেমাই কাস্টার্ড তৈরি করে দেওয়া যেতে পারে। ফালুদা, কাস্টার্ডের সঙ্গে ফলটাও খাওয়া হয়। ডিম দিয়ে পুডিং ও হালুয়ার মতো খাবার তৈরি করে বৈচিত্র্য আনা যায়। এ সময় হাড়ে মিনারেলের ঘাটতি থাকলে পরবর্তী সময়ে অস্টিওপোরেসিস হওয়ার আশঙ্কা থাকে। মিনারেল পাওয়া যাবে নানা ফলমূল ও শাকসবজিতে। বয়ঃসন্ধির সময় মেয়েদের আয়রনের ঘাটতি এড়াতে খেতে হবে আয়রনসমৃদ্ধ খাবার। ডিম, ডাল, মাছ, মাংস ও সবুজ শাকে তা পাওয়া যাবে। কিশোরীরা যদি শারীরিক গঠনের ব্যাপারে সচেতন হতে চায়, তবে লক্ষ্য রাখতে হবে, তারা যেন খাবার খাওয়া কমিয়ে না দেয়। বরং সুষম খাদ্য খেয়ে ব্যায়াম কিংবা কায়িক শ্রমের মাধ্যমে অতিরিক্ত ক্যালরি কমাতে হবে। কৈশোর বা বয়ঃসন্ধিকাল যেহেতু একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়, তাই এ সময় অভিভাবকদের একটু সচেতন হওয়া দরকার। সেই সঙ্গে দরকার কিশোর-কিশোরীর সদিচ্ছা ও ভবিষ্যতে নিজের সুস্থ শরীরের সচেতনতা।
 
Back
Top