Mixed সোনালী ছায়া

dukhopakhidukhopakhi is verified member.

Special Member
Registered
Community Member
1K Post
Joined
Dec 22, 2024
Threads
363
Messages
4,918
Reaction score
1,275
Points
3,863
Age
40
Location
Dhaka, Bangladesh
Gender
Male
সোনালী ছায়া

(কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তা নিয়ে লেখা একটি গল্প)
মুখবন্ধঃ এই গল্পটি বাস্তব ঘটনার ওপর ভিত্তি করে নয়, কিন্তু এটি আমাদের সমাজে চলমান এক গোপন সত্যকে তুলে ধরেছে—চোরাচালান চক্র ও তাদের কৌশল। এই গল্পের আরিফের মতো সাহসী মানুষই একদিন ছায়াকে আলোয় আনবে।






পর্ব - ১


রাত তখন সাড়ে তিনটা। বেনাপোল সীমান্তে ঘন কুয়াশা পড়েছে। কাঁটাতারের ওপাশে কিছুটা আলো জ্বলছে, আর এপাশে, বন বিভাগের পুরোনো কোয়ার্টারে বসে আছেন গোয়েন্দা আরিফ রহমান। সদ্য বদলি হয়েছেন খুলনা থেকে। খবর এসেছে—ভারত থেকে বাংলাদেশে স্বর্ণ চোরাচালানের একটি বিশাল চক্র সক্রিয় হয়েছে।
তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো, স্বর্ণ কখনো ধরা পড়ছে না, অথচ প্রতিদিন সীমান্ত পার হচ্ছে কিছু না কিছু। খবর এসেছে, প্রতিটি চালানে অন্তত ৫ কেজি স্বর্ণ থাকে, এবং সেটা “আদর্শ পরিবহন”-এর ট্রাকে আসে। কিন্তু সেই ট্রাক তল্লাশি করেও কিছুই পাওয়া যায় না।

পরদিন সকালে আরিফ সোজা চলে গেলেন “আদর্শ পরিবহন”-এর অফিসে। অফিসে বসে থাকা মোটা গায়ের, মুখে চাপ দাড়ির মাঝবয়সী লোকটি একটু চটপটে স্বভাবের। নাম—হালিম মিয়া। ট্রাক মালিক, তবে গাড়িগুলোর চালক বদলায় প্রায়ই।
– “আপনার গাড়িতে তল্লাশি করেও কিছু পাওয়া যায় না, অথচ রিপোর্ট বলছে সোনার চালান ঢুকছে। ব্যাপারটা কী?”
হালিম মুচকি হেসে বললেন, “স্যার, আমি তো স্রেফ মাল পরিবহন করি। কী থাকে, কী যায়—আমার জানার কথা না।”
আরিফ চুপচাপ তাকিয়ে থাকলেন লোকটার চোখে। এই হাসি স্বাভাবিক নয়।

তিন দিন পরে এক গোপন সন্ধ্যায় বেনাপোলের রেলগেটের কাছে ধরা পড়ে এক যুবক—বাঘা সুমন। তাঁর কাছে পাওয়া যায় ২৫ গ্রাম সোনা। চোরাচালান চক্রের ছোট এক অংশ। জিজ্ঞাসাবাদে সে স্বীকার করে—প্রতিটি ট্রাকে বসানো থাকে একটা বিশেষ “ফায়ার এক্সটিংগুইশার”, যা আসলে প্লাস্টিক কাভারে মোড়ানো বিশেষ কন্টেইনার। তার ভেতরে গলানো স্বর্ণ রাখা থাকে, যা ঠান্ডা হয়ে যায় প্লাস্টিকের ভিতরেই। দেখতে ঠিক আগুন নেভানোর যন্ত্রের মতো।
আরিফ অবাক হয়ে যান—কোনো এক্স-রে বা স্ক্যানারে ধরা পড়ে না, কারণ সোনা গলানো অবস্থায় রাখা হয়, এবং সেটিকে অন্যান্য রাসায়নিক দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়।

আরিফ এবার সরাসরি পরিকল্পনা করেন হালিমের এক ট্রাক অনুসরণ করার। সাদা পোশাকে থাকা তার টিম “ফলো” করে ট্রাকটি। ট্রাকটি যায় যশোরের এক পরিত্যক্ত কারখানায়। আর সেখানেই ধরা পড়ে পুরো চক্র—প্রায় ৭ জন সদস্য সহ হালিম মিয়া নিজে। ফায়ার এক্সটিংগুইশার খুলে পাওয়া যায় ৩.৭ কেজি গলানো স্বর্ণ।
তদন্তে বেরিয়ে আসে—এই চক্রের পেছনে রয়েছে এক আন্তর্জাতিক সংযোগ, যার নাম “সোনালী ছায়া”। তাদের মূল হেডকোয়ার্টার কলকাতায়। হালিম শুধু একটা শাখা।

হালিম মিয়া জেল খাটলেও “সোনালী ছায়া”-র আসল নেতাকে ধরা যায় না। কিছুদিন পর আরিফ ঢাকায় বদলি হন। একদিন সকালবেলা একটি বন্ধ খামে একটি নোট আসে—
"তুমি এক ছায়া ধরেছো, কিন্তু ছায়া কখনো পুরোপুরি ধরা পড়ে না। আবার দেখা হবে। – ছায়া"

আরিফ জানতেন—এই খেলা এখানেই শেষ নয়। ছায়ার পেছনে ছায়াই আছে।
 
Back
Top