- Joined
- Dec 28, 2024
- Threads
- 107
- Messages
- 1,338
- Reaction score
- 105
- Points
- 63
- Age
- 46
- Location
- Dhaka
- Gender
- Male
![vQLWk04.jpeg](https://i.imgur.com/vQLWk04.jpeg)
প্রখ্যাত ব্রিটিশ প্রফেসর মেনস্কি একবার নীলক্ষেতে এসেছিলেন। উনি দেখলেন উনার ২০০ ডলার দামের বই এখানে একদাম চারশো টাকাতে বিক্রি হচ্ছে। তখন তিনি অবাক হয়ে অন্যদেরকে উপহার দেওয়ার জন্যে নীলক্ষেত থেকে নিজের বই নিজে কিনে নিয়ে গিয়েছিলেন।
এইটাই হলো আমাদের প্রিয় নীলক্ষেত। এখানে কোন কপিরাইট আইন চলে না। আপনি যদি প্রাচীণ গ্রীক ভাষার কোন বইও চান সেটাও এখানে আপনি পাবেন। আপনি রকমারি থেকে বই কিনতে পারেন। পাঠক সমাবেশ কিংবা বাতিঘর অনেক পশ জায়গা। কিন্তু নোংরা গলির এই দামাদামি একবার শিখে গেলে আমাজনওআর পছন্দ হবে না। রকমারি তো দূর কি বাত!
নীলক্ষেত ঢাকা ইউনিভার্সিটির ছাত্রদের জন্যে একটা নিয়ামত। তবে এখানে বই কেনার কিছু নিয়ম আছে। নাহলে লস খাওয়ার প্রচুর সম্ভাবনা আছে। এখানে কোন বইয়ের দাম চারশো টাকা বলা মানে সেই বইয়ের দাম যে চল্লিশ টাকা এরকমটা না। বরং সেই বই আপনি বিশ টাকাতেও কিনতে পারবেন। শুধু কিনতে জানতে হবে, দোকান চিনতে হবে।
কেউ যদি নীলক্ষেতে বই কিনতে শিখে যায়, তাহলে তাঁর সর্বনাশ সেদিন থেকেই শুরু। মানে আপনি দেখবেন তিনশো টাকার বই পঞ্চাশ টাকায় কিনছেন, তাই আরও কয়েকটা কিনি। কিন্তু দিনশেষে দেখবেন আপনার কাছে কোন টাকা নেই। সত্যিকারের বইপড়ুয়া কেউ নীলক্ষেতে যেয়ে পকেটে টাকা সহ ফেরত আসতে পেরেছে এরকম কোন নজীর নাই।
এখন কী হবে? ধরুন, কোন বইয়ের দাম চারশো টাকা বললে আপনি কিনতেন না, কিন্তু বইয়ের দাম যখন দেখছেন পঞ্চাশ টাকা তখন আপনি দাম কম ভেবে আটটা বই কিনবেন। নীলক্ষেতের দোকানগুলোর অধিকাংশ বই কেজি দরে কেনা। তাদের প্রধান লক্ষ্যই থাকে বইগুলো বিক্রি করে ফেলা। এখন আপনাকে কিনতে জানতে হবে। এখানে কোন নির্দিষ্ট মূল্য নাই।
আরেকটা কথা কখনো অমুক বইটা কিনবেন এরকম কোন চিন্তা নিয়ে নীলক্ষেত যাবেন না। এভাবে গেলেই ধরা খাবেন। নীলক্ষেতে যাবেন ঘুরতে। ঘুরতে ঘুরতে বই দেখতে দেখতে বই কিনবেন। এতে ভাল হবে।
এরপরে আছে ঝকঝকে দোকান আর পিছনের দোকান। নীলক্ষেতের সামনের দিকে যে দোকানগুলো আছে সেগুলোতে কিছু নেই। ওখানে আপনি জব রিলেটেড এবং চাকরির বই ছাড়া কোন বই পাবেন না। আপনাকে বই কিনতে হলে ঢুকতে হবে নোংরা চিপা গলি দিয়ে একদম পিছনের দোকানগুলোতে। ওখানে আপনি দুনিয়ার এমন কোন জিনিস নাই যে পাবেন না।
নীলক্ষেতের এই ‘অন্ধকার গলি’ আমাকে ‘নষ্ট’ করেছে বলা চলে। আমি ক্যাম্পাস লাইফে অনেক টাকা ওখানে খুঁইয়েছি। কারণটা হচ্ছে ওখানকার কৌশলটাই এটা যে আপনার কাছে বই বিক্রি করে দেয়া। যত বেশি বই বিক্রি করবে, তত বেশি লাভ। কেজি দরে কেনা বইয়ে আপনার থেকে যে কয় টাকা নিতে পারবে পুরোটাই তাদের লাভ। আর আপনি যদি সেখানে ধরা খান আর একবার নেশা হয়ে যায়, তাহলে আপনি শেষ। আপনার পকেটে কোন টাকা থাকবে না। মানে আপনি জিতলেও আপনার কাছে টাকা থাকবে না, হারলেও টাকা থাকবে না।
তবে দিনশেষে নীলক্ষেত একটা নেশা, নীলক্ষেত একটা ভালবাসা।
(তথ্যসূত্র: বিভিন্ন মাধ্যম থেকে সংগৃহিত, সংকলিত ও পরিমার্জিত)