রঞ্জুর চালাকি

dukhopakhi

Well-Known Member
Community Member
1K Post
Joined
Dec 22, 2024
Threads
169
Messages
1,896
Reaction score
326
Points
1,633
Age
40
Location
Dhaka, Bangladesh
Gender
Male
রঞ্জু ওর গার্লফ্রেন্ড নিশি কে কল দিয়ে বললো,“বাবু আজ বের হতে পারবা?”

কেন?

তোমাকে খাওয়াতাম। সব সময় তো তুমিই আমাকে খাওয়াও। আজ আমি তোমাকে খাওয়াবো।

সত্যি?

হ্যাঁ, তুমি জলদি চলে এসো। আমি টিউশনি শেষ করে মালিবাগ মোড়ে থাকবো।

নিশির মনটা ভালো হয়ে গেলো! যাক একদিন অন্তত রঞ্জু ওকে খাওয়াবে। হয়তো কিছু গিফট টিফট দিবে। সুন্দর করে সেজেগুজে নিশি বাসা থেকে বের হলো।

নিশি দাঁড়িয়ে আছে মালিবাগ মোড়ে। রঞ্জু এখন আসে নি। একা দাঁড়িয়ে থাকতে নিশির একটু খারাপ লাগছে!

টিউশনি শেষ করে বের হতে রঞ্জুর একটু দেরি হয়ে গেলো। নিশি কে আজ খাওয়াতে হবে! হয়তো গিফটও দিতে হবে। অনেকগুলো টাকা খরচ হয়ে যাবে। নিশি বড়লোকের মেয়ে, রঞ্জুর অবস্থা বুঝতে পারে না!

নিশি দেখলো রঞ্জু হেঁটে হেঁটে আসছে। ওকে দেখতে বেশ ভালো লাগছে! রঞ্জু কাছে এসে বললো,“কখন এসেছো?”

দশ মিনিট হবে।

কোথায় যাবে বলো?

নিশি একটু হেসে বললো,“তুমি বলো?”

আচ্ছা চলো বসুন্ধরায় যাই। তুমি অনেকদিন থেকে একটা মোবাইলের কথা বলছো। তোমাকে একটা মোবাইল কিনে দিই। তারপর দুইজনে একটা রেস্টুরেন্টে খাবো। তুমি চাইলে আমরা একটা মুভিও দেখতে পারি।

ওয়াও! তুমি আমায় মোবাইল কিনে দিবা?
আমার বিশ্বাসই হচ্ছে না। আমার যে কী ভালো লাগছে!

কী বিশ্বাস হয় না?

রঞ্জু মানিব্যাগটা বের করে নিশির সামনে ধরলো।
দ্যাখো, আমার কাছে আজ কত টাকা!!

নিশি দেখলো রঞ্জুর মানিব্যাগে অনেকগুলো এক হাজার টাজার নোট দেখা যাচ্ছে। নিশির খুব ভালো লাগছে! এতোদিন ভেবেছিল রঞ্জু একটা ফকির! কিন্তু না রঞ্জুর মনটা বড় আছে।

রঞ্জু মানিব্যাগটা নিশির হাতে দিলো। "নাও দেখো।"

নিশি মানিব্যাগটা হাত বাড়িয়ে নিলো।
রঞ্জু বললো,“তুমি দাঁড়াও, আমি একটা রিকশা ঠিক করি।”

রঞ্জু রিকশা ঠিক করার জন্য রাস্তার দিকে এগিয়ে গেলো। এ সময় আচমকা একটা মোটরসাইকেল এলো। মোটর সাইকেলে দুইজন ছেলে বসা। পিছনে বসা ছেলেটা চিলের মতো নিশির হাত থেকে মানিব্যাগটা ছিনিয়ে নিলো।

নিশির চিৎকার শুনে রঞ্জু মোটরসাইকেলের পিছু নিলো। অনেকটা পথ দৌড়ে ক্লান্ত হয়ে গেলো! মোটরসাইকেল হাওয়া হয়ে গেলো।

নিশি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলো ঘটনাটা! কেন যে সে রঞ্জুর মানিব্যাগটা নিলো!

রঞ্জু মন খারাপ করে বসে রিকশায়। নিশি জোর করে নিয়ে আসল বসুন্ধরায়। একটা মোবাইল কিনলো ওরা। টাকা নিশি দিলো।

দুইজনে খাওয়া-দাওয়া করলো। রঞ্জুর মনটা এখন কিছুটা ভালো হয়েছে। যদিও সব খরচ নিশিই করছে। কী আর করার!

ফেরার সময় নিশি রঞ্জুর হাতে বিশ হাজার টাকা দিলো।

রঞ্জু অবাক হয়ে বললো,“এত টাকা কেন?”

বাঃ রে!! তোমার সব টাকা তো হারিয়ে গেলো। এখন তুমি চলবে কী করে?
একটুও মন খারাপ করো না। তুমি তো আমাকে দিতে চেয়েছিলে তা-ই না?

রঞ্জু টাকা নিলো। যদিও টাকা নিতে তার ভালো লাগছে না!

রঞ্জু বসে আছে চায়ের দোকানে। আজকে রঞ্জু খাওয়াবে। তার ভালো আয় হয়েছে। কত হয়েছে তা অবশ্য বন্ধুরা জানে না।

মিলন বললো,“শা*লা! অমন দৌড় দিলি কেন?
আমার তো মনে হয়েছে বাইক ধরে ফেলবি!”

“দৌড়টা না দিলে নিশির মনটা গলতো না! এমনিতেই দুই মাস ধরে ঘুরাচ্ছি একটা মোবাইল কিনে দিবো বলে!”

রইস বললো,“তোর কপালটাই ভালো! এমন মেয়ে পটাতে পেরিছিস।”

মিলন একটু হাসি দিয়ে বললো,“খেলাটা ভালোই ছিলো মামা! তোর জন্য এতো বড় রিস্ক নিলাম কিছু মা'ল পানি ছাড়।”

রঞ্জু উঠে দাঁড়ালো। "আমাকে একটু বের হতে রে।"

বললেই হলো! কোনো কথা শুনবো না, সোজা টাকা বের কর।

না মানে! নিশি কল দিয়েছে, ওর না-কি পরিচিত পুলিশ অফিসার আছে। ওনার কাছে আমাকে নিয়ে যাবে। রাস্তার বাইক চোর ধরা নাকি কোনো ব্যাপার না!

কোনো কিছু দেয়া লাগবে না দোস্ত। শুধু এসব ঝামেলা যেন না হয় দেখিস।

রঞ্জু বললো,“চায়ের বিলটা দিয়ে যাবো দোস্ত?”

“না, তুই যা আমরাই দিবো!”


বিঃদ্রঃ লেখাটি অন্তর্জাল হতে সংগৃহীত
 
Back
Top