- Joined
- Dec 22, 2024
- Threads
- 407
- Messages
- 5,564
- Reaction score
- 2,005
- Points
- 3,913
- Age
- 40
- Location
- Dhaka, Bangladesh
- Gender
- Male
ভাগ্য!!!
(অন্তর্জাল হতে সংগৃহীত)
(অন্তর্জাল হতে সংগৃহীত)
ইতিহাস বলে ১৯১০-১৯১৭ মেক্সিকোতে অস্ত্র বিপ্লব সংঘটিত হয়েছিল। এ সময়টায় অ্যাডেলা নামের মেয়েটি যে আজকের গল্পের নায়িকা হতে চলেছে বিপ্লব কালে মেক্সিকান একটি বিখ্যাত সার্কাসে কাজ করত। অ্যাডেলা এবং তার অন্ধ প্রেমিক ছিল সার্কাসের প্রধান আকর্ষণ।
প্রতি রাতের সার্কাস সো তে, অ্যাডেলা কাঠের তৈরি দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে হাত-পা প্রসারিত করে দাঁড়িয়ে থাকত,এবং তার অন্ধ প্রেমিক ছুরি ছুঁড়ে মারত যা অ্যডেলার জীবনের জন্য মারাত্মক বিপজ্জনক হলেও খেলা টিতে অংশগ্রহণ করত- তার মনোবল এতো ই জোর দার ছিল যে, ধারালো অস্ত্রটিও মনে হয় লজ্জায় তাকে স্পর্শ করেনি কখনো। তাদের এই খেলাটি সেই সময়কার কিংবদন্তি হয়ে উঠেছিল, কিন্তু বিখ্যাত হওয়ার নানা রকম বিরম্বনাও আছে।
শ্রেষ্ঠত্বর অহংকার স্বয়ং বিধাতার গুন। মানুষ হিসেবে জন্মানোর সবচেয়ে বড় অ্যাডভান্টেজ হল বিধাতার কিছু গুণ আত্মস্থ করতে পারা।
অন্ধ প্রেমিক তার অহংকার নিয়ে ভূপতিত হলো । আমি শ্রেষ্ঠ তাই আমি এডেলার চেয়ে বেশি বেতন পাওয়ার যোগ্য, সে বলল আমার কারণেই সার্কাস দলটি টিকে আছে। আমি আরও ভালো পারিশ্রমিক পাওয়ার যোগ্য।" সার্কাসের মালিক তাকে যুক্তি দেওয়ার চেষ্টা করে বলল, যুদ্ধের এই কঠিন সময়ে অর্থনৈতিক অবস্থা মন্দা যাচ্ছে, কিন্তু অবশেষে তাকে বুঝাতে ব্যর্থ হয়ে অ্যাডেলাকে বেতন কমানোর চক্রান্ত শুরু করে। অথচ প্রেমিক এই প্রস্তাবে এক কথায় রাজি হয়ে গেল। তার ধারণা এ্যডেলা দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া আর কিছুই করে না। তার একক প্রতিভার জন্য না আজকে এত নাম যশ ছড়িয়েছে।
সার্কাসের মালিক যখন অ্যাডেলাকে তার প্রেমিকের মনোভাব সম্পর্কে জানিয়ে বলল তোমার বেতন কেটে তোমার প্রেমিক কে দিতে হবে কারণ সে তোমার চেয়ে বেশি যোগ্য, এডেলা বলল আমি তার জন্য আমার জীবনের ঝুঁকি নিই কারণ আমি তাকে ভালোবাসি। কিন্তু আমারও টাকার প্রয়োজনীয়তা থাকতে পারে। সে এতো স্বার্থপর হতে পারলে আমি আমার প্রাপ্য থেকে নিজেকে বঞ্চিত কেন করব। মালিক বলল অনেক সুন্দরী মেয়ে আছে যারা কম বেতনে এটি করতে রাজি আছে। অ্যাডেলার হৃদয় ভেঙে গেল দুই জন পুরুষের এমন বিশ্বাসঘাতকতা দেখে। সে পরের দিন সকালে প্রথম ট্রেন ধরে বেরিয়ে গেল সার্কাস দল ছেড়ে।
এদিকে, একটি নতুন মেয়ে দলে যোগ দিলো। প্রথম সো তেই ধারালো ছুরি সরাসরি মেয়েটির হৃদপিন্ডে গেঁথে গেল। মৃত্যু অবধারিত। মেয়েটির বাবা আর ক্ষুব্ধ শহরবাসী বলল, "খুনি! তুমি দাবি করেছিলে তোমার অতিপ্রাকৃত ক্ষমতা আছে!" এই তার নমুনা। জনগণ অন্ধ প্রেমিক এবং সার্কাসের মালিককে পিটিয়ে হত্যা করে ফেলল।
ধারণা করা হলো যে অ্যাডেলারই হয়তো এমন কিছু ক্ষমতা আছে যা - ধাতব পদার্থ থেকে তাকে সুরক্ষিত রাখত। অ্যাডেলাই ছিল তাদের খ্যাতির পিছনের রহস্য। সার্কাস ছেড়ে যাওয়ার পর, সে মেক্সিকান বিপ্লবে যোগ দিয়েছিল, যুদ্ধে সৈন্যদের সাহায্য করতে তার প্রতিভা ব্যবহার করত। বলা হয় যে সে তার শক্তি একাধিকবার "পঞ্চো ভিলা" কে বাঁচাতে ব্যবহার করেছে; সে ছিল একজন মেক্সিকান বিপ্লবী যে রবিন হুড নামে ডাকাত দলের প্রধান হিসেবে পরিচিত।
অতিপ্রাকৃত ক্ষমতা বলে কিছু আছে কিনা জানিনা। তবে কিছু মানুষ ইউনিভার্স কর্তৃক আশীর্বাদ প্রাপ্ত হয়। যাকে আমরা আমাদের ভাষায় সৌভাগ্য বলে থাকি। অ্যাডেলা ভালোবাসায় বঞ্চিত হলেও একজন সৌভাগ্যবান নারী কারণ প্রতারণায় হারিনি তার জীবন।
সমাপ্ত