অবিশ্বাস্য প্রাণী জগৎঃ পেরেগ্রিন ফ্যালকন

WhisperBD

Well-Known Member
Registered
1K Post
Joined
Dec 28, 2024
Threads
107
Messages
1,338
Reaction score
105
Points
63
Age
46
Location
Dhaka
Gender
Male
5AaOcYl.jpeg


সবচেয়ে দ্রুত শিকারি প্রাণীর তালিকার এমন একটি পাখির নাম রয়েছে যেটা চিতা, বাজপাখি, ঈগলকেও পেছনে ফেলেছে। এই পাখিটি চিতার চেয়ে পাঁচগুণ গতিতে তার শিকারকে আক্রমণ করে। কিন্তু কতজনই বা আর এই পাখিটির কথা জানে। পেরেগ্রিন ফ্যালকন, বিশ্বের দ্রুততম পাখি। শুধু তাই নয়, এটি সব থেকে দ্রুততম প্রাণীও। এটিই পৃথিবীর বুকে সবচেয়ে দ্রুততম প্রাণী। অন্য কোনো প্রাণী এর চেয়ে দ্রুত চলতে পারে না। এমনকি একটি রেসিং গাড়িও।

cemfuGE.jpeg


স্থলজ পরিবেশের দ্রুততম প্রাণী চিতা ঘণ্টায় ১১২ কিলোমিটার বেগে চলে। আর এই পাখি চলে প্রায় তার ৪ গুণ বেশি, ঘণ্টায় প্রায় ৩৯০ কিলোমিটার বেগে। পৃথিবীর দ্রুততম মানুষ উসাইন বোল্ট। দৌড়ের গতির জন্য গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লিখিয়েছিলেন তিনি। বোল্টের গতি ঘণ্টায় ৪৪ দশমিক ৭২ কিলোমিটার। পেরেগ্রিন বোল্টের চেয়ে ৯ গুণ বেশি গতিতে উড়তে পারে।

gUslbSE.jpeg


পেরেগ্রিন ফ্যালকন ঘণ্টায় ৩৯০ কিলোমিটার বেগে তার শিকারকে আক্রমণ করে। এই পাখিটি তার গতির কারণেই পরিচিত। আকাশ হোক বা মাটি, এই পাখির আক্রমণের গড় গতি প্রতি ঘণ্টায় ৩২০ কিলোমিটার। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক টিভি প্রোগ্রাম অনুযায়ী, এই পাখির সর্বোচ্চ গতি হতে পারে ৩৯০ কিমি প্রতি ঘণ্টা। এর গতি এতটাই বেশি যে, চোখের পলকে তার শিকারকে আক্রমণ করতে পারে।

O5bsZSw.png


গবেষণায় দেখা গেছে, এই পাখির শিকার খালি চোখে দেখতে পাওয়া খুব কঠিন। তবে কোনো ভিডিও থাকলে স্লো মোশনে দেখা যাবে। চিতার আক্রমণের গতি ঘণ্টায় ৮০-১৩০ কিলোমিটার আর ঈগলের ঘণ্টায় ২৫০-৩০০ কিলোমিটার। তাহলে বুঝতেই পারছেন এই পাখি সব কিছুর ঊর্ধ্বে!

x95fwf8.jpeg


ন্যাটজিওর তথ্য অনুযায়ী, পেরেগ্রিন ফ্যালকনের সর্বোচ্চ রেকর্ড গতিবেগ হচ্ছে ৩৯০ কি.মি./ঘণ্টা (২৪২ মাইল/ঘণ্টা)। এই অবিশ্বাস্য গতিটি সে অর্জন করে শিকারের ওপর লম্বভাবে নিম্নমুখী ডাইভের সময়।

2B3Y9Zy.jpeg


আমরা জানি, শূন্য থেকে যে কোনো বস্তুর নিম্নমুখী পতনের সময় বস্তুটির ওপর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি কাজ করে। স্কাই ডাইভারদের পতনের সময় প্যারাসুট খোলার আগ পর্যন্ত গতিবেগ হয়ে থাকে ২০০ কি.মি./ঘণ্টা (১২০ মাইল/ঘণ্টা)। একজন মানুষের শরীর যেমন ভারী, তেমনি পতনের সময় তার ওপর বাতাসের বাধাও বেশি। তাহলে পেরেগ্রিনের সর্বোচ্চ গতিবেগ ২৪২ মাইল/ঘণ্টার অর্ধেকই মাধ্যাকর্ষণের অবদান। এটি একটি প্রাথমিক হিসাব। তবে কোনো পাখিকে যে গতিটি সম্পূর্ণ নিজ যোগ্যতায় অর্জন করতে হয়, সেটি হলো, ভূমির সমান্তরাল ফ্লাইট। সেক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক বিভিন্ন প্রাণীর নিজ সামর্থ্যে অর্জিত সর্বোচ্চ গতিবেগ পেরেগ্রিন ফ্যালকন ১১০ কিমি/ঘণ্টা, কবুতর ১৬০ কিমি/ঘণ্টা, চিতা ১২০ কিমি/ঘণ্টা। এ কারণেই পেরেগ্রিন কখনোই সমান্তরালভাবে ধাওয়া করে তার প্রিয় খাদ্য কবুতরকে ধরতে পারে না। কবুতরও কোনো মতে, পেরেগ্রিনের ডাইভকে একবার এড়িয়ে যেতে পারলে, তাকে সমান্তরাল ফ্লাইটে প্রলুব্ধ করে। তারপর তার নিজের খেলা খেলতে থাকে।

khjgAIl.jpeg


এত কিছুর পরেও পেরেগ্রিন ফ্যালকনকে তার প্রাপ্য কৃতিত্ব দিতে হবে। ওপর থেকে ডাইভের সময় সে নিজ শরীরটিকে তীরের ফলার মতো বানিয়ে ফেলে। ফলে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি গতিবেগ অর্জিত হয়ে যায়। পেরেগ্রিন ফ্যালকনের দৈনিক ফ্লাইট প্রায় ১০০ কিমি/ঘণ্টাবেগে যায়, কিন্তু যখন শিকারের কথা আসে তখন এটি ৩০০ কিমি/ঘণ্টাএরও বেশি গতিতে স্টিং করতে সক্ষম হয়। তার সম্পূর্ণ শারীরস্থান নিখুঁতভাবে অভিযোজিত হয় চরম গতির জন্য যে সে অর্জন করতে পারে। তাই এটা নতুন নয় যে এর অ্যারোডাইনামিকসের অংশ মহাকাশ স্টিলথ সেক্টরে গৃহীত হয়েছে।

cs5casD.jpeg


পাখির বাংলা নামঃ আগুনে বাজপাখি, ইংরেজী নামঃ পেরেগ্রিন ফ্যালকন (Peregrine Falcon), বৈজ্ঞানিক নামঃ Falco peregrinus Tunstall । পাখি বিশারদদের কারো কারো কাছে ‘পেরেগ্রিন বাজপাখি’ নামেও পরিচিত। এটি রকেট বার্ড নামেও পরিচিত। এটি ডাক হক নামেও পরিচিত। এরা সাধারণত উপকূলে এবং জনবিরল নদীর তীরে অবস্থান করে।

(তথ্যসূত্র: বিভিন্ন মাধ্যম থেকে সংগৃহিত, সংকলিত ও পরিমার্জিত)
 
Back
Top